স্বাস্থ্য জনসচেতনতায় জনবান্ধব ও স্মার্ট সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক।
দেশের শতকরা প্রায় ৮০% লোকই গ্রামে বাস করেন আর তাদের অধিকাংশই দরিদ্র। আবার অনেকেই এত গরীব যে, তারা দরিদ্র সংজ্ঞারও বাইরে। তারা সমাজের অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষ। যারা বেলা দুমুঠো খাবার যোগাড় করতেই হিমসিম খায়, তারা কী করে রোগের চিকিৎসার কথা ভাববেন? আর তাই এই অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের কথা ভেবেই বর্তমান সরকার সারা বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেন। সেই সুবিধা বঞ্চিত মানুষের আস্থা একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি, আর সিএইচসিপির সাথে স্বাস্থ্য সেবায় আস্থ্য অর্জনে একমাত্র হাতিয়ার তাদের নিয়ে খোলা মেলা আলোচনা করা। খোলামেলা আলোচনা করলে সেবা গ্রহিতা ও সেবা দাতার মাঝে বিশ্বাস অর্জন হয়। যা স্মাট বাংলাদেশ ও স্মাট কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরীতে সহায়ক।
এলাকার লোকজন সেবা গ্রহিতা ও সেবা দাতার মধ্যে যে কোন প্রকার দুরত্ব না থাকে তাই জনসচেতনতা ও উন্মুক্ত আলোচনাই একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকে জনবান্ধব তৈরীতে সাহায্য করে। সিএইচসিপি ও জনগনের মাঝে আত্ন বিস্বাস তৈরী হয়।
একজন সিএইচসিপি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতি দিন গড়ে ৩৫/৪০ জন সাধারন রোগীকে সেবা দেন। তাই সাধারন রোগীদের যেতে হচ্ছে না উপজেলা হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, প্রাইভেট হাসপাতালে, ফলে একজন রোগী যেমন- সময়, যাতায়ত খরচ, মহিলা হলে তার সাজু গুজু ও সঙ্গে একজন সাথী, ওষুধ কেনা, অর্থনৈতিক থেকে রক্ষা পাচ্ছে, সাবলম্বী হচ্ছে তার পরিবার, তেমনি- উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে কমছে রোগীর চাপ।
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার ৯ নং ভিয়াইল ইউনিয়নের খেড়কাটি কমিউনিটি ক্লিনিকের তথ্য ভান্ডার ব্লগ সাইট খুলে সরকারের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সরকারের ভিশন ২০২১ এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। খেড়কাটি কমিউনিটি ক্লিনিকের তথ্য ভান্ডার ব্লগটিতে যে তথ্য, উপাত্ত আছে তা খেড়কাটি সিসির অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবে এবং তা সবার কাছে সহজ লভ্য হবে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করণের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী দপ্তর, পরিদপ্তর ও অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সচ্ছতা, গতিশীলতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সেবার মান আরো উন্নত হবে ও দুর্নীতি সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। পরিশেষে খেড়কাটি কমিউনিটি ক্লিনিকের তথ্য ভান্ডার ব্লগটি সফলতা ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সিএইচসিপি সর্বদাই প্রস্তুত।
https://kharkaticc.blogspot.com/
কমিউনিটি ক্লিনিক একটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। বিগত বছরে বিশ্বব্যাপী মহামারি করনার কারণে জনসমাগম না করে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবাসহ কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় নিয়ম-কানুন মেনে চলার গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা হয় এই ব্লগ সাইটের মাধ্যমে। যা তথ্য প্রযুক্তিতে কমিউনিটি ক্লিনিক একধাপ এগিয়ে।
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দেশেই সব চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বিদেশে যাচ্ছে, কারন তারা দেশিয় চিকিৎসায় ভরসা রাখতে পারছেন না কিংবা দেশের চিকিৎসাসেবা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নন। এমনকি দেশের উন্নত চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগতও নন অনেকে। এমতাবস্থায়, যাতে সবাই দেশের উন্নত চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে জানতে পারে এবং আস্থা রাখতে পারে। এতে করে ডলার সাশ্রয় হয়ে একদিকে দেশের অর্থনীতি যেমন উপকৃত হবে, তেমনি মানুষের ভোগান্তিও কমবে বহুলাংশে। তাই জনবান্ধব জনসচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে খেড়কাটি কমিউনিটি ক্লিনিক।
২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় পাটগাতি ইউনিয়নের ঘিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিকে শুভ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের শুভযাত্রা সূচনা করেন। বর্তমান সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে সেবা পৌঁছে দিয়েছে। এই সেবাকে আরো উন্নত ডিজিটাল সেবায় কাজ করছে সিএইচসিপি। জনসচেতনতাই এ সেবা নিশ্চিত করবে। ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থ্যায় কমিউনিটি ক্লিনিক বিশেষ অবদান রেখেছ। সিএইচসিপির মোবাইল ফোনে ২৪ ঘন্টায় পরামর্শ দেয়া হয়, প্রয়োজনে উপজেলা হাসপাতাল মোবাইলে, সিসি ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মোবাইল ফেনে অভিযোগ ও পরামর্শ প্রদান। ক্লিনিক থেকে রেফারের মাধ্যমে উপজেলা হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা। MHV এর মাধ্যমে খানা তথ্য অনলাইলে ভুক্ত করা। গর্ভবতী মা ও ৫ বছরের নিচে শিশু অনলাইন DHIS-2 তে রেজিষ্ট্রেশন ও সেবা। ৩০-৬০ বছর মহিলার VIA রেজিষ্ট্রেশন ।
সব কিছুর মুলে জনসচেতনতা, জনগনকে জানানো এবং বুঝানো ডিজিটাল স্বাস্থ্য।কমিউনিটি ক্লিনিকে CHCP সর্বদা ৪টি সেবা গুরুত্বসহকারে করে আসছে –
যা স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট জনগন স্মার্ট কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়ক।
১. উন্নয়ন মুলক সেবা-
অথ্যাৎ জনগোষ্টির জীবনধারায় সুস্বাস্থ্যের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করা।
যেমন-
১. স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে জনগোষ্ঠীর সচেতনতা বাড়ানো।
২. স্বাস্থ্য সমস্যার সন্মুখীন হলে তারা যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে, এ লক্ষে তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে জ্ঞান
দান।
৩. সুসম পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে জ্ঞানদান ও তা গ্রহনে উৎসাহ দান।
৪. স্বল্পব্যয়ে স্বাস্থ্যসন্মত বাসস্থান, পায়খানা ও বিশুদ্ধ পানির ব্যাবহার নিশ্চিতকরণ।
২. প্রতিরোধ মুলক সেবা:
অথ্যাৎ রোগ প্রতিরোধক সেবা প্রদানের মাধ্যমে রোগের উৎপত্তি রোধ করে বিস্তার
কমানো সম্ভব। যেমন-
ক. শিশুদের ও গর্ভবতীমাদের রোগ প্রতিষেধক টিকা দিয়ে মারাত্বক ১০টি
রোগের হাত থেকে বাচান।
খ. শিশুদের ৬মাস পর ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর ফলে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
গ. মহিলাদের জন্য লৌহ বটিকা খাওয়া ও রক্তসল্পতা প্রতিরোধ করা।
৩. আরোগ্য মুলক সেবা: #. রোগাক্রান্ত ব্যাক্তিদের সময়মত সঠিক চিকিৎসো প্রদানের করা এবং প্রয়োজনে রেফারাল ব্যবস্থা করা।
৪. পুনবাসনমূলক সেবা:
সিএইচসিপি এর কর্মপন্থা-
- স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রন করা।
- প্রাথমিক স্বাস্থ্য
সেবা নিশ্চিত করা এবং গুরুতর রোগী রেফার করা।
-অনলাইন গর্ভবতী মা
এবং <০৫ শিশু রেজিষ্ট্রেন ও DLI, পুষ্টি পুরন এবং ৩০-৬০ বছর মহিলাদের VIA শতভাগ রেজিষ্ট্রেশন। মৃত রেজিষ্ট্রেষন।
-অনলাইনে মাসিক সাধারন,
শিশু , মাতৃস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা, কমিউনিটি মবিলাইজ তথ্য তথ্য প্রদান।
মানুষের স্বাস্থ্য সেবা অধিকার আর মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এমন একটি বিশ্বসমাজ গড়ে তোলা যেখানে শিশুরা তাদের সুপ্ত সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে আর অসংক্রামক রোগ ও সংক্রামক রোগ থেকে যেন পরিত্রান ঘটে । পরিত্রান ঘটে অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কারের।
সিএইচসিপির এর উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য চাহিদা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে জোরদার করার লক্ষ্যে ৬০০০-১০,০০০ এলাকাবাসীকে নিয়ে কাজ করা। সিএইচসিপি প্রধানত সর্বস্থরের জনগন নিয়ে কাজ করে। সমাজে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বাস্থ্য সেবা / স্বাস্থ্য শিক্ষা পেয়ে থাকে। বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণী ও নারী ও পুরুষদের নিয়ে সিএইচসিপি কাজ করে ।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য সচেতনতা দরকার। স্বাস্থ্য সচেতনতার দিক
গুলো হল।
- দৈনন্দিন কাজ কর্মে স্বাস্থ্য সচেতনতা।
- খাদ্যাভাসে স্বাস্থ্য সচেতনতা।
- অসুখ নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা।
- আচার আচরনে স্বাস্থ্য সচেতনতা।
দৈনন্দিন
কাজ কর্মে স্বাস্থ্য সচেতনতায় থাকবে পরিস্রুত পানীয় জল পান করা,
শৌচের পরে ও খাওয়ার আগে
সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। স্বাস্থ্যবিধিসম্মত শৌচাগার ব্যবহার করা। ইত্যাদি।
খাদ্যাভাসে
স্বাস্থ্য সচেতনতায় থাকবে ক্ষতিকর খাদ্য ও পানীয় ব্যবহার
না করা। মাদক সেবন থেকে দুরে থাকা। ভেজাল খাদ্য নিয়ে সচেতন থাকা।
অসুখ
নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতায় উল্লেখ করা যায় অসুখের কারণ জানা। অসুখের সময় পথ্যের ব্যবহার ভুল ধারণা আছে, সেখান থেকে মুক্ত থাকা। অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর ওষুধ
ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। যুক্তিযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচলন দরকার।
আচার
আচরনে স্বাস্থ্য সচেতনতায় বলা য়ায় পরিবেশকে নির্মল ও পরিচ্ছন্ন রাখা।
যত্র তত্র আবর্জনা না।

খুব উপকারী পোষ্ট, ধন্যবাদ ফরহাদ ভাই, আপনি আমাদের গর্ব। এভাবে এগিয়ে যান আমরা আছি আপনার পার্শে।
উত্তরমুছুন