Resent Post
Loading...

কমিউনিটি ক্লিনিক অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্ব অনন্য স্বীকৃতি

 


প্রফেসর ডাঃ সৈয়দ মোদাসসের আলী

চেয়ারম্যান, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট

১৭ মে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনন্য দিন। এটি শুধু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস নয়, এটি বাংলাদেশের পুনঃজাগরণ দিন। বছর ১৭ মে বাংলাদেশের আরেকটি অনন্য অর্জন এলো জাতিসংঘের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকমিউনিটি ক্লিনিকপেল বৈশ্বিক স্বীকৃতি।

  গতকাল জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি রেজল্যুশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা : সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতিশিরোনামের ঐতিহাসিক রেজল্যুশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশের প্রস্তাবিত রেজল্যুশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকেদ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভহিসেবে উল্লেখ করে। এটি জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। সাধারণ পরিষদে রেজল্যুশনটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এই রেজল্যুশনটি কো-স্পন্সর করে।

community Clinic


রাষ্ট্রদূত মুহিত তাঁর বক্তব্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এই রেজল্যুশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এই রেজল্যুশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।

মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেন, রেজল্যুশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্ত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই রেজল্যুশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ এটি সদস্য দেশগুলোয়, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তন বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক দাতাদের যথাযথ কারিগরি আর্থিক সহযোগিতা দিতে আমন্ত্রণ জানায়।

আরো পড়ুন :- খেড়কাটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রফাইল

বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার পর্যন্ত সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিতে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজল্যুশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি মো. মনোয়ার হোসেন। মিশন কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এর ধারাবাহিকতায় এই রেজল্যুশন বছরের শুরুর দিকে মিশন সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে গত চার মাস নিবিড় আলোচনা নেগোসিয়েশনের পরে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে প্রথম সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় মডেল কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে এটি বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০৮ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা পুনরায় ২০০৯ সালে এই কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেন। 

 শেখ হাসিনা দেখলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেই। তখন তিনি সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল উদ্ভাবন করলেন। তিনি বললেন ২৫-২৬ মিনিট হাঁটার দূরত্বে একটি করে স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক করতে। সেখানে এইচএসসি পাস লোকদের ট্রেনিং করিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে এবং সেখান থেকে যেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের রেফার করা যায়।

আসলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাকে যদি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হয়, তাহলে কমিউনিটি ক্লিনিকই একমাত্র মডেল। জন্যই আজ এটাকে গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ। তারা একে বলল, অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্ব; নাম দিলদ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ

 

0 মন্তব্য(গুলি):